রাস্তা দুর্গম হলেও অপরূপ সুন্দর নাফাখুম ঝরণা। যাওয়ার পথটি যতটা কঠিন ঠিক ততটাই সুন্দর। অভূতপূর্ব এই ঝরণা ও পাহাড়ি পথের সৌন্দর্য যে কাউকে মুগ্ধ করে তুলবে। মনে রাখতে হবে সারা জীবন। বান্দরবান জেলার থানচি উপজেলার রেমাক্রি স্থানটি সাঙ্গু নদীর উজানে একটি মারমা বসতী। বান্দরবান জেলার থানচি উপজেলার রেমাক্রি একটি মারমা অধু্যসিত এলাকা। বান্দরবন হতে ৭৯ কিমি. দুরে অবস্থিত থানচি। এটি একটি উপজেলা। সাঙ্গু নদীর পাড়ে অবস্থিত থানচি বাজার। এই সাঙ্গু নদী ধরে রেমাক্রীর দিকে ধীরে ধীরে উপরে উঠতে হয় নৌকা বেঁয়ে। উপরে উঠা বলছি এই কারনে যে আসলেই নদীটা রেমাক্রী হতে থানচির দিকে ধীরে ধীরে ঢালু হয়ে এসেছে আর এই কারনে এখানে এত স্রোত।
নদী কিছুদূর পর পর ১-২ ফুট এমন কি কোথাও কোথাও ৪/৫ ফুট পর্যন্ত ঢালু হয়ে নিচে নেমেছে। প্রকৃতি এখানে এত সুন্দর আর নির্মল হতে পারে ভাবাই যায় না। নদীর দুপাশে উচু উচু পাহাড়। সবুজে মোড়ানো প্রতিটি পাহাড় যেন মেঘের কোলে শুয়ে আছে অবলিলায়। কোন কোন পাহাড় এতই উচু যে তার চূড়া ঢেকে আছে মেঘের আস্তরে। অসাধারন সে দৃশ্য। সবুজে ঘেরা সে পাহাড়ে হঠাৎ হঠাৎ দেখা যায় দু একটি উপজাতী বসতঘর। পাহাড়ের ঢালুতে টিন আর বেড়ার ঘর গুলো দেখে মারমা ভাষায় ‘খুম’ মানে হচ্ছে জলপ্রপাত। রেমাক্রি থেকে তিন ঘন্টার হাঁটা পথ পাড়ি দিয়ে যেতে হয় আশ্চর্য সুন্দর সেই জলপ্রপাতে, যার নাম ’নাফাখুম’।
রেমাক্রি খালের পানি প্রবাহ এই নাফাখুমে এসে বাঁক খেয়ে হঠাৎ করেই প্রায় ২৫-৩০ ফুট নিচে পতিত হয়ে প্রকৃতির খেয়ালে সৃষ্টি হয়েছে চমৎকার এক জলপ্রপাত! সূর্যের আলোয় যেখানে নিত্য খেলা করে বর্ণিল রংধনু! আকাশে তরি হয় হাজার রঙের আলোকচ্ছটা। মেঘের আড়ালে যখন সূর্য হাসে আলোর সে হাসির ঝিলিক ছড়িয়ে পড়ে পুরো পাহাড়তলে। খরস্রোত নদীর জল সাই সাই করে ধেয়ে যায় কলকল শব্দে। ভয়ংকর সে নদীর সৌন্দর্য যেন আরো ভয়ংকর। যারা বিদেশের মাটিতে সুন্দরকে খুজে বেড়ান তাদের জন্য নাফাখুম চ্যালেঞ্জ ছাড়া আর কিছুই নয়। এ দেশে এমন সুন্দর থাকতে পারে তা বিশ্বাস করাই মুশকিল। পাহাড়, নদী আর পাথুরে খাল দেখে মনে হবে যেন কোন এক ছবির পাতায় পাতায় হাটছি। অসাধারন সুন্দর, অসহ্য সুন্দর। পানির গমগম করে ঝড়ে পরার শব্দে চারদিক মুখরিত। বর্ষার সময় ঝর্নার আকার বড় হয়। আর শীতের দিনে তা ক্ষীন হয়ে যায়। তবে সেপ্টেম্বর অক্টোবর মাসে নাফাখুমের প্রকৃত সৌন্দর্য দেখা যায়। উপর হতে আছড়ে পড়া পানির আঘাতে ঝর্নার চারিদিকে সৃষ্টি হয় ঘন কুয়াশার। উড়ে যাওয়া জলকনা বাষ্পের সাথে ভেসে ভেসে শরীরে এসে পড়ে। রোমাঞ্চকর সে অনুভূতি। একে বাংলার নায়াগ্রা বললে ভূল বলা হবে না। দুপাশের সবুজ পাহাড়ী বন আর পাথুরে ভুমি নাফাখুম ঝর্নাকে দিয়েছে ভিন্ন মাত্রা, করেছে আরো আকর্ষনীয়। পাথরের ফাকে ফাকে ছোপ ছোপ সবুজ ঘাসের থোকা সৌন্দর্যের মাত্রা আরো বাড়িয়ে দিয়েছে কয়েকগুন।
মারমা ভাষায় 'খুম' মানে হচ্ছে জলপ্রপাত। রেমাক্রি থেকে তিন ঘন্টার হাঁটা পথ পাড়ি দিয়ে যেতে হয় আশ্চর্য সুন্দর সেই জলপ্রপাতে, যার নাম 'নাফাখুম'। রেমাক্রি খালের পানি প্রবাহ এই নাফাখুমে এসে বাঁক খেয়ে হঠাৎ করেই নেমে গেছে প্রায় ২৫-৩০ ফুট....প্রকৃতির খেয়ালে সৃষ্টি হয়েছে চমৎকার এক জলপ্রপাত! সূর্যের আলোয় যেখানে নিত্য খেলা করে বর্ণিল রংধনু! ভরা বর্ষায় রেমাক্রি খালের জলপ্রবাহ নিতান্ত কম নয়... প্রায় যেন উজানের সাঙ্গু নদীর মতই। পানি প্রবাহের ভলিউমের দিক থেকে সম্ভবতঃ নাফাখুম-ই বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় জলপ্রপাত। পানির গমগম করে ঝড়ে পড়ার শব্দে চারদিক মুখরিত। বর্ষার সময় ঝর্নার আকার বড় থাকে আর শীত মৌসুমে তা ক্ষীন হয়ে যা। সেপ্টেম্বর অক্টোবর মাসে নাফাখুমের প্রকৃত সৌন্দর্য দেখা যায়। একে বাংলার নায়াগ্রা বললে ভূল বলা হবে বা। পাহাড়, নদী আর পাথুরে খাল দেখে মনে হবে যেন কোন হলিউডের সিনেমার ভেতরে আছি। দুপাশের সবুজ পাহাড়ী বন আর পাথুরে ভুমি নাফাখুম ঝর্নাকে দিয়েছে ভিন্ন মাত্রা, করেছে আরো আকর্ষনীয়। আমাদের দেশে এমন সুন্দর জায়গা আছে তা বিশ্বাস করাই মুশকিল।
আমার দেশে এত সুন্দর একটা জলপ্রপাত....অথচ আমরা খুব কম জন-ই এই জলপ্রপাতটা সম্মন্ধে জানি! এখানে নদীগুলোর গভীরতা একেবারেই কম। কোথাও কোথাও পানির তলার পাথর দেখা যায়। কোথাও বা নদীর মাঝেই উচু হয়ে আছে পাথর। কিন্তু গভীরতা কম হলে কি হবে মারাত্মক স্রোত। একটু উনিশ বিশ হলেই সর্বনাশ। যেখানে নদী ঢালু হয়ে গেছে সেখানে প্রচন্ড স্রোত। গমগম করে নেমে যাচ্ছে পানির ঢল। এমন জায়গায় নৌকা প্রায় চলতেই পারে না। তাই নেমে হেটে যেতে হয়। যাত্রা পথে এমন ভাবে বেশ কয়েকবারই নেমে নেমে হেটে যেতে হয়। শীতকালে নদীতে পানি কম থাকে বলে এই উঠা নামার পরিমানটা অনেকবেশী থাকে। এই পথে যেতে যেতে আপনাকে পারি দিতে হবে তিন্দু ও বড় পাথর। তিন্দুতে একটি বিজিবি ক্যাম্প আছে। অসাধারন সুন্দর একটি স্থান তিন্দু। অনেকে নাফাখুম যাবার পথে থানচি না থেকে তিন্দুতে এসে রাত্রিযাপন করে। এখানে থাকার জন্য কিছু ঘর ভাড়া পাওয়া যায়।
কিভাবে যাওয়া যায়:
কিভাবে যাওয়া যাবে: ১. বাসে করে ঢাকা টু বান্দরবান যেতে হবে। (রাতে রওনা হলে পরদিন সকালে পৌঁছাবে।) ২. বান্দরবান থেকে থানচি যেতে হবে চাঁদের গাড়িতে। সময় লাগবে ৪ ঘন্টার মত। (দুপুর ১ টার মধ্যে যাওয়া যাবে।) ৩. থানচি থেকে ১টা বোট ঠিক করে নিতে হবে রেমাক্রী যাওয়ার জন্য। থানচি চেক পোস্ট এ নাম-ঠিকানা লিখতে হবে। থানচি থেকে তিন্দু হয়ে রেমাক্রী বাজার পৌছাবে। সব কিছু ঠিক থাকলে সময় লাগবে ৪ ঘন্টা। (ওই দিনই রউনা হলে প্রথম দিনই রেমাক্রী বাজার যাওয়া যাবে, অথবা রাতে থানচি থেকে পরদিন খুব সকালে রওয়ানা করা যাবে। ) ৪. রেমাক্রী বাজার এ ১ টা রেস্ট হাউস আছে। রেস্ট হাউস খালি না পেলেও ২০/২৫ টা বাড়ি আছে যার প্রায় প্রতিটিতেই ভাড়া থাকার মত রুম আছে । তাও খালি না পেলে ১ টা স্কুল আছে, স্থানীয়দের সাথে যোগাযোগ করে থাকা যাবে। ৫. রেমাক্রী বাজার থেকে পায়ে হেটে নাফাখুম রওনা হতে হবে। যাওয়া ২ ঘন্টা ও ফিরে আসা ২ ঘন্টা , মোট ৪ ঘন্টা লাগবে। ৬. ফেরার জন্য বোট আগে থেকে টিক করে রাখতে হবে। সকালে উঠে রউনা হলে দুপুরের আগেই থানছি পোছানো যাবে। দুপুরের খাওয়া শেষ করে বান্দরবন এর গাড়িতে উঠতে হবে। প্রতিদিন ১টা নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত বাস চলে। ওই সময়ের মধেই বাস ধরতে হবে। ৭. সন্ধায় বান্দরবান এসে রাতের গাড়িতে ঢাকা রওনা হতে হবে। পরদিন সকালে ঢাকা পৌঁছাবে।
পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নে: মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, এটুআই, বিসিসি, ডিওআইসিটি ও বেসিস